রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিজস্ব বাসভবনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়েস। দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্লাউডি জোসেফ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। বুধবার (৭ জুলাই) বিবৃতির মাধ্যমে বলা হয়, সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র একটি দল প্রেসিডেন্ট জোভেনেলের বাড়িতে মাঝরাতে হামলা চালায় এবং তাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
জানা যায়, ভয়াবহ এই হামলায় প্রেসিডেন্টের স্ত্রীও আহত হয়েছেন। অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে স্থানীয় সময় রাত একটার দিকে অজ্ঞাত সশস্ত্র হামলাকারীরা হামলা চালায়।
৫৩ বছর বয়সী জোভেনেল মইসি ক্ষমতায় আসেন ২০১৭ সালে।হাইতি পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। এর সরকারি নাম হাইতি প্রজাতন্ত্র। ক্যারিবীয় সাগরের হিস্পানিওলা দ্বীপের পশ্চিম এক-তৃতীয়াংশ এলাকা নিয়ে রাষ্ট্রটি গঠিত। দ্বীপের বাকী অংশে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র অবস্থিত।১৮০৪ সালে হাইতি লাতিন আমেরিকার প্রথম স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। এটিই দাসদের সফল বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট একমাত্র রাষ্ট্র। হাইতি প্রথমে স্পেনীয় ও পরে ফরাসি উপনিবেশ ছিল।
হাইতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আফ্রিকান দাসেরা ফরাসি ঔপনিবেশিকদের উৎখাত করলে হাইতি স্বাধীনতা লাভ করে। পর্তোপ্রাঁস দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।এই পাহাড়ি দেশটি একসময় অরণ্যে আবৃত ছিল। বেশির ভাগ গাছই কেটে ফেলা হয়েছে, যার ফলে মৃত্তিকার ক্ষয় ঘটেছে। পল্লী অঞ্চলে কৃষকেরা পাহাড়ের পাদদেশে ক্ষুদ্রাকার জমিতে চাষবাস করে। অপুষ্টি ও বেকারত্ব হাইতির বড় সমস্যা।উল্লেখ্য, হাইতির জনগণ দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে আছে ক্ষুদ্র একটি শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণি, যারা বেশিরভাগ সম্পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী। অন্যদিকে আছে বিশাল নিম্নবিত্ত শ্রেণি যাদের কোন ক্ষমতা নেই। বর্তমানে হাইতি পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ। অনেক হাইতিয় দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। হাইতির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস দীর্ঘ। দেশটিতে অনেকগুলি স্বৈরশাসক শাসন করেছেন। এদের মধ্যে ফ্রঁসোয়া দুভালিয়ে-র নাম উল্লেখযোগ্য। ২১শ শতকের প্রারম্ভে এসে হাইতি একটি গ্রহণযোগ্য সরকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা করছে।